

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুন্সীগঞ্জে ব্যতিক্রমী ও স্মরণীয় আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো লিয়ন দেওয়ান ও খাদিজা আক্তারের বিয়ে। প্রয়াত নানা জয়নাল আবেদিন দেওয়ানের শেষ ইচ্ছা বাস্তবায়নে, বরের মামা ২৫ জুন (বুধবার) লিয়ন-খাদিজা নবদম্পতিকে হেলিকপ্টার ও ঐতিহ্যবাহী পালকিতে করে বরণ করে নেন। এই আয়োজন একসাথে তুলে ধরেছে প্রাচীন ও আধুনিকতার এক বিরল সমন্বয়।
বর লিয়ন দেওয়ান মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের দেওয়ানকান্দি গ্রামের স্বপন দেওয়ানের ছেলে। কনে খাদিজা আক্তার একই গ্রামের সুমন বেপারীর মেয়ে। দীর্ঘদিন ধরে পারস্পরিক সম্পর্কে থাকা এই যুগলের বিয়েতে ছিল আবেগ, ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার ব্যতিক্রমী রূপ।
লিয়নের নানা জয়নাল আবেদিন দেওয়ান জীবদ্দশায় ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন—তার নাতি ও নাতবউকে হেলিকপ্টার ও পালকিতে করে বাড়িতে তুলে আনবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন। পরে তার ছেলে—লিয়নের মামা—এই ইচ্ছা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেন এবং বড় আয়োজনের মাধ্যমে সেই স্বপ্ন পূরণ করেন।
২৫ জুন বিকেলে দেওয়ানকান্দি এলাকায় হেলিকপ্টার অবতরণ করে, আর নবদম্পতিকে পালকিতে করে বাড়িতে আনা হয়। আয়োজনটি দেখতে এবং নবদম্পতিকে এক নজর দেখার জন্য গ্রামবাসীসহ আশপাশের কয়েক হাজার মানুষের ঢল নামে। পুরো এলাকা এক উৎসবমুখর পরিবেশে রূপ নেয়।
বর লিয়ন দেওয়ান বলেন, “আমার নানার শেষ ইচ্ছা ছিল আমাকে হেলিকপ্টার ও পালকিতে করে ঘরে তোলা হোক। আজ তা পূরণ করতে পেরে আমি গর্বিত ও আবেগাপ্লুত। সবার কাছে দোয়া চাই যেন আমরা ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারি।”
কনে খাদিজা আক্তার জানান, “হেলিকপ্টারে চড়ার অভিজ্ঞতা যেমন নতুন, তেমনি এমন আয়োজনে বিয়ে হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। যারা এই আয়োজন করেছেন, তাদের সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”
এ আয়োজন যেমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসা কুড়িয়েছে, তেমনি অনেকেই বলছেন—এটা এক নজিরবিহীন আয়োজন, যেখানে হারিয়ে যাওয়া পালকির ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক হেলিকপ্টারের যুগলবন্দি দেখা গেছে। সংস্কৃতির এমন মিলন গ্রামীণ বিয়েকে দিয়েছে এক নতুন মাত্রা।
এমন ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন শুধু স্থানীয় নয়, জাতীয় পর্যায়েও তৈরি করেছে আলোচনার ঝড়। এটি হতে পারে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি অনুপ্রেরণাদায়ী গল্প—যেখানে স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে স্বপ্নকে বাস্তব করা সম্ভব।