আল্লামা ইকবালের জন্মবার্ষিকীতে ‘ইকবাল ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আল্লামা ইকবালের ১৪৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে “ইকবাল ও গণতন্ত্র” শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আল্লামা ইকবাল সংসদের উদ্যোগে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।
বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী শাহ্ আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক ও কবি নাসির হেলাল।
নাসির হেলাল বলেন, “রাজনীতি ও ধর্ম একে অপরের সংরক্ষক। ধর্ম ছাড়া গণতন্ত্র প্রাণহীন ও মূল্যহীন। আল্লামা ইকবাল ইসলামের আলোকে আলোকিত গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন। প্রথম জীবনে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ছিলেন, কিন্তু ইউরোপ থেকে ফিরে মুসলিম জাতীয়তাবাদের পক্ষে সোচ্চার হন।”
তিনি আরও বলেন, “ইকবালের মতে তন্ত্র-মন্ত্র নয়, গণতন্ত্রই মুক্তির পথ—তবে তা ইসলামী মূল্যবোধে পরিচালিত হতে হবে।”
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রিটায়ার্ড আর্মি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)-এর প্রেসিডেন্ট কর্নেল আব্দুল হক। তিনি বলেন, “১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা না হলে আজকের বাংলাদেশও স্বাধীন হতে পারত না। কাশ্মীর এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ভারতীয় আধিপত্য থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় ছিল দ্বিজাতি তত্ত্ব, যা আল্লামা ইকবাল প্রচার করেছিলেন। এখন সময় এসেছে সেই সত্য কথা নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার।”
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন পাকিস্তানের জিও টিভির সাংবাদিক সীমা সিদ্দিকী, করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বেনসন সিদ্দিকা, এবং দেশের বরেণ্য চিন্তাবিদেরা। বক্তারা বলেন, “আল্লামা ইকবাল শুধু ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ বা ইরানের নয়, বরং আন্তর্জাতিক সাহিত্যেরও অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ও দার্শনিক। তাঁর চিন্তাধারা আজও মুসলিম বিশ্বকে প্রেরণা জোগাচ্ছে।”
তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একসময়কার ‘ইকবাল হল’-এর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে, যা ইতিহাসের প্রতি অবজ্ঞা।”
আল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল (১৮৭৭–১৯৩৮) ছিলেন উপমহাদেশের খ্যাতনামা মুসলিম কবি, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিক। তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘আসরার-ই-খুদী’ (১৯১৫), রুমুজ-ই-বেখুদী’, পয়গাম-ই-মাশরিক’এবং জুবুর-ই-আজাম’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৪৭ সালের দ্বিজাতি তত্ত্বের অন্যতম প্রবক্তা হিসেবেও ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।
